image

কী কী টিপস ব্যবহার করলে মানুষের খুব প্রিয় হওয়া যায়? 

 

৪টি টিপস ব্যবহার করলে মানুষের খুব প্রিয় হওয়া যায় (বিজ্ঞানসম্মত ধাপ)

 

আপনি কি নিজেকে সবার সামনে পরিচিত করাতে চাচ্ছেন অর্থাৎ আপনার পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং তৈরি করতে চাচ্ছেন? তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য সবচাইতে উপযুক্ত একটি পোস্ট হতে চলেছে। কিভাবে আপনি সকলের প্রিয় একজন মানুষ হতে পারবেন তার জন্য আপনি চমৎকার কিছু টিপস পেয়ে যাবেন আজকের এই ব্লগ পোষ্টের মাধ্যমে।   

 

এই পোস্টের মাধ্যমে আমরা এমন চারটি পদ্ধতির কথা আলোচনা করবো যেগুলো আসলে বিজ্ঞানসম্মতভাবে প্রমাণিত, আপনি নিজে এই পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করলই এর প্রমাণ হাতেনাতে পেয়ে যাবেন।  

 

প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আজকের এই পোস্টটিকে মনোযোগ দিয়ে পড়ুন এবং প্র্যাকটিস করতে থাকুন, আপনার মধ্যে নতুন একটি দক্ষতা তৈরি হয়ে যাবে।   

 

মানুষের কাছে প্রিয় হওয়ার জন্য কি টিপস ব্যবহার করতে হবে? 

 

আমরা সর্বদাই সবার কাছে প্রিয় হতে চাই, এই প্রিয় হওয়াটাকে বাণিজ্যিকভাবে বলা হয় ইনফ্লুয়েন্স মার্কেটিং অর্থাৎ আপনি যদি একবার সবার কাছে প্রিয় হয়ে যান তাহলে আপনি সবাইকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা রাখতে পারেন। 

 

খুব সহজভাবে মানুষ আপনার কথাকে বিশ্বাস করবে এবং আপনার প্রতিশ্রুতিকে সবসময় গ্রহণ করার চেষ্টা করবে। বর্তমা্নে আপনি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায়ই দেখে থাকবেন বেশ কিছু ইনফ্লুয়েন্সার আমাদেরকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে।     

 

আর এভাবে আপনি যদি একটি পজিটিভ বিষয়কে ছড়িয়ে দিতে চান ইনফ্লুয়েন্সিং করার মাধ্যমে বা আপনার পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং তৈরি করে সবাইকে যদি খুশি করতে পারেন তাহলে সহজেই সমাজকে পরিবর্তন করতে পারবেন।

 

আপনি যেকোনো পরিস্থিতিতে, যেকোনো জায়গায় যে কাউকে ইমপ্রেস করতে পারবেন এরকম ৪টি গুরুত্বপূর্ণ টিপস আপনাকে শেয়ার করছি।

 

পোস্টটি একটু বড় হতে পারে তবে একটু ধৈর্যসহকারে পুরোটা পড়ার অনুরোধ রইলো।

 

(১) সবার প্রথমে আপনাকে একটি কানেকশন খুঁজে বের করতে হবে:

 

আপনি যাদের কাছে প্রিয় ব্যক্তি হতে চাচ্ছেন তাদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করার জন্য প্রথমে আপনাকে একটি কানেকশন খুঁজে বের করতে হবে। এটাই হচ্ছে একটা মানুষের সাথে সম্পর্ক তৈরি করার প্রথম ধাপ।

 

মানুষের সাথে সম্পর্ক তৈরি করতে হলে যেহেতু কানেকশন খুঁজে পেতে হবে, তাই কানেকশন খুঁজে পেতে হলে, আপনাকে; 

 

  • তাদের কি প্রয়োজন
  • তাদের কি আগ্রহ
  • তাদের কি উদ্বেগ এবং
  • তাদের কি প্রত্যাশা 

 

সেগুলোর প্রতি সবার আগে নজর দিতে হবে। মনে রাখতে হবে যে প্রথমেই আপনা্র কোন কিছু বলা যাবে না, তাদের আগ্রহ তাদের, উদ্বেগ এবং তাঁদের কী প্রয়োজন আছে সেগুলো শুনতে হবে।  

 

উদাহরণ হিসেবে, একজন স্মার্টফোন দোকানদারের কাছে এসে একটি কাস্টমার বলল যে যখন আমার স্মার্টফোনের ব্যাটারি খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায় তখন কিন্তু আমার খুব বিরক্ত লাগে।

 

তাহলে এখানে স্মার্টফোন দোকানদারের জন্য কানেকশন হলো তার কাস্টমারের ব্যাটারির চার্জ খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাওয়া।

 

(২) আপনি যে কানেকশনটি পেয়েছেন সে কানেকশনটিকে ভালোভাবে রিপিট করতে হবে:

 

এখানে আপনাকে আপনার প্রিয় মানুষটির কানেকশন রিপিট করে তার সাথে একাত্মতা প্রকাশ করতে হবে। যেমন উদাহরণ হিসেবে আমি স্মার্টফোন দোকানদারের যে কানেকশনটি দিয়েছিলাম সেটাকে দেখিয়ে দিচ্ছি অর্থাৎ

 

এখনই স্মার্টফোন দোকানদারের উচিত হবে তার কাস্টমারের সাথে ঠিক এইভাবে কথা বলা অর্থাৎ "আপনি ঠিকই বলেছেন স্মার্টফোনের ব্যাটারি যখন খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায় তখন আসলেই খুব বিরক্ত হয়ে যাওয়ার কথা"

 

যখনই আপনি আপনার প্রিয় মানুষটির সমস্যা বা তার প্রয়োজনকে এভাবে খুব আন্তরিকতার সাথে রিপিট করতে পারবেন তখনই সে আপনাকে খুব প্রিয় একজন মানুষ হিসেবে বিবেচনা করা শুরু করবে কারণ সে মনে করবে যে আপনি তার সমস্যাটাকে নিজের মনে করে দেখছেন। 

 

এটা খুব সাধারণ একটি যুক্তি, আপনার ক্ষেত্রেও এবং আমার ক্ষেত্রেও তাই হয়ে থাকে। প্রথম এবং দ্বিতীয় ধাপ সম্পন্ন হওয়ার পরে এখন আমরা তৃতীয় ধাপে দেখব আমাদেরকে কি করতে হবে? 

 

(৩) সমস্যাটির আরো গভীরে প্রবেশ করতে হবে:

 

এই ধাপে আপনার প্রিয় মানুষটির সমস্যার আরো গভীরে যেতে হবে এবং তাকে খুব গভীরভাবে অনুসরণ করতে হবে, সেইসাথে মনোযোগ দিয়ে তার সমস্যাগুলোকে বুঝতে হবে।

 

এই ধাপে তাকে সহানুভূতি দেখানো যাবে না, তাকে দেখাতে হবে পরানুভতি। সহানুভূতি এবং পড়ানুভূতির মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে একটু দেখে নিন (সহানুভূতি হল তার সাথে আপনি একমত আর পরানুভতি হচ্ছে তার মতো করে আপনি তার সমস্যাটাকে অনুভব করছেন) 

 

আবার উপরের উদাহরণটিতে আমি যাচ্ছি অর্থাৎ স্মার্টফোন দোকানদারকে এটা বুঝতে হবে যে, তার কাস্টমারের যে সমস্যা সেটা যেন সে (দোকানদার) খুব আন্তরিক ভাবে নিজের মত করে প্রকাশ করে। অর্থাৎ কাস্টমার যাতে বুঝতে পারে যে আপনি তার সমস্যাটাকে একই লেভেলে অনুভব করছেন।  

 

(৪) সারা জীবন মনে রাখার মতো একটি ইম্প্রেশন তৈরি করতে হবে:

 

এই ধাপে আপনাকে এমন কিছু করে দেখাতে হবে যাতে আপনার প্রিয় ব্যক্তিটি বা আপনাকে যারা অনুসরণ করছে তারা যাতে আপনার কথা সব সময় মনে রাখে।

 

এর জন্য আমাদের কি করতে হবে তা হলো; 

 

একটা বিষয় আপনারা সব সময় মনে রাখবেন সেটা হচ্ছে মানুষ কিন্তু মধ্যবর্তী কোন বিষয়কে মনে রাখেনা। যেমন

 

➡️ অধিক সুখ এবং অধিক দুঃখ

➡️ অনেক ঠান্ডা এবং অনেক গরম

➡️ অনেক সম্মান এবং অনেক অপমান

➡️ অনেক লাভ এবং অনেক লোকসান

 

এর মাঝামাঝি কিন্তু আমরা কোন কিছু মনে রাখতে পারি না, আমরা সবসময় সবচেয়ে বেশিটাকে অথবা সবচেয়ে কমটাকে মনে রাখি।

 

একটু ভেবে দেখুন আপনার জীবনের সবথেকে সুখের দিন কোনটি ছিল? সেটাকে কিন্তু আপনি এখনই মনে করতে পারবেন বা সেই দিনে কি কি ঘটেছিল আপনার সাথে, তার অনেক কিছুই আপনি মনে করতে পারবেন।

 

কিন্তু সেই দিনটির ঠিক আগের দিনএবং পরের দিন কী ঘটেছিল সেটা কিন্তু আপনি মনে রাখতে পারবেন না।

 

তাই এই ধাপে আপনার প্রিয় মানুষটির জন্য আপনাকে এমন একটি ইম্প্রেশন তৈরি করতে হবে যাতে সে সারাজীবন আপনার কথা মনে রাখবে।

 

উদাহরন হিসেবে আবার স্মার্টফোন দোকানদারের উদাহরণটি দেওয়া যেতে পারে, এই ধাপে সে তার কাস্টমারকে এমন একটি সমাধান দিতে পারে যাতে তার কাস্টমারটি তার কথা সারা জীবন মনে রাখে।

 

উপরের এই ৪টি টেকনিক ভাল করে অনুসরণ আপনি যেকোন ব্যক্তি, যেকোন গোষ্ঠী বা সমাজের যে কোন অংশকে প্রভাবিত করতে পারেন।

 

এটি একটি বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি। এই পদ্ধতি আপনি নিয়মিত ব্যবহারের মাধ্যমে সবার মাঝে আপনি একজন প্রিয় ব্যক্তি হয়ে উঠতে পারবেন।  

 

মনে রাখতে হবে যে এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া, নিয়মিতভাবে আপনাকে এটি প্র্যাকটিস করতে হবে। প্রথমত হয়তোবা কিছু দিন সময় লেগে যেতে পারে তবে নিয়মিতভাবে অনুশীলন করলে আপনি এর থেকে অসাধারণ ফলাফল পাওয়া শুরু করবেন।  

 

আমি ব্যক্তিগতভাবে একটা কথাকে অনেক বিশ্বাস করি তাহলো শুরুতেই ভালো জিনিসের জন্য ফলাফল আসতে সময় লাগ, কিন্তু যখন ফলাফল আসা শুরু হয়ে যায় তখন কিন্তু চক্রবৃদ্ধি আকারে ফলাফল আসতেই থাকে।  

 

এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ হচ্ছে আপনি যখন আপনার বডিবিল্ডিং করবেন কোন জিমে গিয়ে, শুরুতেই ফলাফল আসতে অনেক সময় লেগে যায় কারণে অনেকে হতাশ হয়ে বডিবিল্ডিং করা ছেড়ে দেয়, বস্তুত এখানে সময় নিয়েই ফলাফল অর্জন করতে হবে।  

 

পোষ্টের নিচের কমেন্ট সেকশনে আপনার গুরুত্বপূর্ণ কমেন্টের আশা করছি। পোস্টের বিষয়বস্তুগুলো যদি বুঝতে না পারেন তাহলে অবশ্যই সেখানে কমেন্ট করুন অথবা আমাকে কমেন্টে মেনশন করুন, তাহলে আমি বুঝতে পারবো যে আপনাদের এই বিষয় সর্ম্পকে আগ্রহ তৈরি হয়েছে।

 

ধন্যবাদান্তে  

রাশেদুল ইসলাম, লীডারশীপ ট্রেইনার এবং বিজনেস কনসালটেন্ট