নিজের মনকে কিভাবে সংযত রাখতে হয়?
আত্মউন্নয়নের যতগুলো কন্টেন্ট রয়েছে তারমধ্যে এই কন্টেন্টটি সবথেকে সেরা একটি কন্টেন্ট । শুরুতেই বলে রাখছি আপনি নিজের মনকে নিয়ন্ত্রণ বা সংযত করার জন্য সবচেয়ে উপযোগী একটি পোস্ট পড়তে চলেছেন।
আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি একটু বড় হবে এবং এটি বিশ্লেষণধর্মী একটি আর্টিকেল। আর্টিকেলটির জন্য আমরা বেশ কিছু তথ্যের সাহায্য নিয়েছি। একটু ধৈর্য এবং মনোযোগ দিয়ে পড়লে আমার মনে হয় এটি আপনার জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ টুলস হিসেবে কাজ করবে।
নিজের মনকে সংযত রাখার উপায়:
নিজের মনকে সংযত রাখার জন্য আপনাকে আগে এটা জানতে হবে যে আপনার মন কেন বিশৃংখল হয়ে যাচ্ছে?
একেবারে সোজাসাপ্টা ভাষায় বলতে গেলে দেখবেন, আপনার মন তখনই বিশৃংখল হচ্ছে যখন আপনি আপনার লক্ষ্যের বাহিরে চলে যাচ্ছেন বা আপনি পুরোপুরি লক্ষ্যের বাহিরে গিয়ে চিন্তাভাবনা করছেন।
আমি একটি সাধারণ উদাহরণ দিচ্ছি, বিষয়টা আপনার কাছে অবাক লাগতে পারে কিন্তু আসলেই সত্য।
ধরুন আপনার লক্ষ্য হচ্ছে সৃষ্টিকর্তার প্রার্থনা করা বা ভক্তি করা। এখন আপনার এই প্রার্থনার বাহিরে অন্য যেকোন কিছুর উপরে মনোযোগ দেওয়াকে বলা হচ্ছে লক্ষ্য থেকে দূরে চলে যাওয়া।
আপনার লক্ষ্য হচ্ছে কোন দক্ষতাকে ভালো করে শেখা, উদাহরণ হিসেবে ইংরেজি ভাষাকে ভাল করে রপ্ত করা। এখন এই লক্ষ্যের বাহিরে যখন আপনি চিন্তা করছেন যে আপনি বন্ধু-বান্ধবসহ রেস্তোরাঁয় খেতে যাবেন তখন এটা হচ্ছে আপনার লক্ষ্য থেকে দূরে চলে যাওয়া।
আর এই বিশৃংখল বিষয়টাকে বলা হয় কামনা। আমরা সবাই মনে করে থাকি যে কামনা বলতে শুধুমাত্র যৌনতাকেই বোঝানো হচ্ছে, বিষয়টি হচ্ছে আমাদের ভুল ভাবনা।
আসলে কেবল যৌন চাহিদাই কামনা হিসেবে গণ্য হয় না। আপনার লক্ষ্যকে ডিস্ট্রাকশন করে এমন সবকিছুকেই কামনা অথবা ইংরেজিতে লাস্ট বলা হয়। তার মানে যে কোন চিন্তাভাবনা যা আপনার লক্ষ্যকে নষ্ট করে দিচ্ছে সেটাই হচ্ছে কামনা।
আর কামনা হচ্ছে দাউদাউ করা আগুন এর মত, এটাকে আপনি শুরুতে নেভানোর চেষ্টা করবেন এটা আরো বৃদ্ধি পাওয়া শুরু করবে।
যেমন, আপনার শরীরে যদি চুলকানি শুরু হয় আর সেটাকে যদি আপনি চুলকানো শুরু করেন তাহলে চুলকানি আরো বেড়ে যায়। যেমন, যৌন চাহিদার ইচ্ছাপূরণ করার পর আপনার যৌন চাহিদার ইচ্ছা কমে যাবে না বরং আরো বেড়ে যাবে।
ঠিক সেইভাবে আপনি যদি মদ, নেশার দ্রব্যের চাহিদা পূরণ করার জন্য এটাকে ব্যবহার করেন তাহলে সেই চাহিদা আরো বেড়ে যাবে। ধূমপান করার ফলে ধূমপানের চাহিদা কমে যায় না বরং আরো বেড়ে যায়।
আর এই কামনাসমূহকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে আপনি আপনার লক্ষ্যের দিকে পরিষ্কার হতে পারবেন এবং আপনার মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
একটি কথা সবসময় মনে রাখবেন যে আমাদের মন হচ্ছে একেবারে খোলা জানালা যেটিকে বন্ধ করা অসম্ভব। আমাদের এই মনের মধ্যে সারাদিন অসংখ্য ধরনের তথ্য এসে জমা হয়ে যাচ্ছে।
আমরা এই পদ্ধতিটি কে বন্ধ করতে পারবো না কিন্তু আমাদের পঞ্চ ইন্দ্রিয়কে (চোখ, নাক , মুখ , কান এবং হাত) সঠিকভাবে ব্যবহার করে এই পদ্ধতিকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রন করতে পারবো।
এতদিন আপনার এই খোলা জানালায় যত ধরনের তথ্য ঢুকে গেছে সেটা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কোন দরকার নাই, কিন্তু এখন থেকেই আপনি আপনার এই পঞ্চইন্দ্রিয় কে পুরোপুরি শক্তিশালীভাবে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করুন দেখবেন জাদুর মত কাজ করা শুরু করবে।
তাই আজকে থেকে শুধু সেই বিষয়গুলোকেই দেখবো, যা আমার লক্ষ্যের সাথে সম্পৃক্ত।
👉 সেই বিষয়গুলোকে ধরে ছুঁয়ে দেখবো, যা আমার লক্ষ্যের সাথে সম্পর্কিত।
👉 সেই বিষয়গুলোকে আহার করব, যা আমার লক্ষ্যের সাথে সম্পর্কিত।
👉 এবং সেই বিষয়গুলো শুনবো, যা আমার লক্ষ্যের সাথে সম্পর্কিত।
তাহলে আমি আপনাদের মনকে সংযত রাখার জন্য একটি ফর্মুলা দিয়ে দিচ্ছি সেটি হচ্ছে:
Input = Output
> Negative in = Negative out
> Positive in = Positive out
> Good in = Good out
অর্থাৎ মনের মধ্যে নেতিবাচকতা প্রবেশ করলে আপনার ভেতর থেকে নেতিবাচক বিষয়বস্তু বের হবে এবং মনের মধ্যে যদি আপনি ভালো বিষয়বস্তুকে প্রবেশ করান আপনার ভেতর থেকে ভালো বিষয়বস্তু বের হবে।
তাই নিজের মনকে সংযত রাখতে হলে আপনাকে সবার আগে একটি লক্ষ্য পরিষ্কারভাবে নির্ধারণ করতে হবে।
তারপর আপনার লক্ষ্যের সাথে সম্পর্কিত সকল বিষয়গুলোকে গ্রহণ করতে হবে এবং বাকী সকল বিষয়কে বর্জন করতে হবে।
একটি বিষয় দেখুন ভাল মাইন্ডসেট ভাল সংঘের কথা বলা হয়েছে, এরকম একটি গ্রুপ আমরা তৈরি করেছি যেখানে সব ইতিবাচক মাইন্ডসেটের লোকজন দিয়ে তৈরি।
এই গ্রুপ সম্পর্কে যদি আপনি বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আপনি আমাদের অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে মেসেজ করতে পারেন +8801316886988 সেখানে আমাদের টিম থেকে আপনাকে বিস্তারিত গাইডলাইন প্রদান করা হবে।
ধন্যবাদ 🙏
রাশেদুল ইসলাম, ফাউন্ডার, স্কিলস রাইডার